Category: নাসিরুদ্দিন হোজ্জা

হোজ্জা অসুস্থ

একবার নাসিরুদ্দিন হোজ্জা অসুস্থ।নিজের গাধাটাকে খাওয়ানোর জন্য বিবিকে বললেন।হোজ্জার বিবি একটু ত্যাদড় টাইপের।সে গাধা কে খাবার দিতে অস্বীকার করল।দুজনের মধ্যে এই নিয়ে তুমুল ঝগড়া।তারপর একটা সমঝোতা হল, যে আগে কথা বলবে সে গাধাকে খাওয়াবে।হোজ্জা বাজিতে জেতার ব্যপারে ডিটারমাইন্ড ছিল।
সেইদিনই, হোজ্জার বিবি বাইরে গেছে, খালি বাসা দেখে একটা চোর ঘরে ঢুকল।হোজ্জা বাসায় ছিল, কিন্তু বাজিতে হেরে যাওয়ার ভয়ে চোরকে কিছু বলল না।চোর নির্বিঘ্নে ঘরের সব কিছু নিয়ে চলে গেল।হোজ্জার স্ত্রী বাসায় ফিরে এসে যখন দেখল সব কিছু খালি, চিৎকার দিয়ে বলল, হায় আল্লা! কি হইছে?
হোজ্জা খুশিতে লাফিয়ে উঠল, আমি জিতছি বাজিতে, এখন তোমারেই গাধাকে খাওয়ান লাগবে।

হোজ্জা বাজার থেকে

একদিন হোজ্জা বাজার থেকে কলিজা কিনে বাসায় যাচ্ছিলেন।এদিকে তাঁর এক বন্ধু তাঁকে কলিজার পাই বানানোর রেসিপি দিয়েছিলেন, যাতে বাসায় গিয়ে কলিজার পাই রান্না করতে পারেন।কিন্তু হঠাৎ একটি বাজপাখি উড়ে এসে কলিজা ছিনিয়ে নিয়ে একেবারে নাগালের বাইরে উড়ে চলে গেল।
বোকা কোথাকার!চেঁচিয়ে হোজ্জা বললেন, কলিজা নিয়ে গেছ ঠিক আছে, কিন্তু প্রস্তুত প্রণালী (রেসিপি )তো আমার কাছে!

এক তুর্কির ষাঁড়

এক তুর্কির ষাঁড় হোজ্জার বাগানের বেড়া ভেঙে ভেতরে ঢুকে তছনছ করে দিয়ে মালিকের কাছে ফিরে গেল।হোজ্জা পুরো ব্যাপারটা লক্ষ করলেন, তারপর একটা বেত নিয়ে বেরিয়ে এসে ষাঁড়টাকে পেটাতে শুরু করলেন।
কোন সাহসে আমার ষাঁড়কে আপনি পেটাচ্ছেন! তুর্কি চেঁচিয়ে বলল।
কিছু মনে করবেন না আপনি, হোজ্জা বললেন, ও পুরো ব্যাপারটা জানে।এটা ওর আর আমার ব্যাপার!

তুমি একটা নেকড়ে

হোজ্জার এক প্রতিবেশী শিকারে গিয়ে নেকড়ের কবল থেকে এক ভেড়াকে বাঁচিয়ে বাড়ি নিয়ে আসে, পালবে বলে। শিকারির যত্নে ভেড়াটি দিন দিন নাদুস-নুদুস হয়ে উঠল। একদিন শিকারির লোভ হলো ভেড়ার মাংস খাওয়ার জন্য। তাই জবাই করতে উদ্যত হতেই ভেড়াটি ভয়ে বিকট শব্দে চিত্কার জুড়ে ছিল। ভেড়ার চিত্কারে হোজ্জার ঘুম গেল ভেঙে। ব্যাপারটা বোঝার জন্য সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবেশীর বাড়িতে ছুটে গেলেন হোজ্জা।
হোজ্জাকে দেখে শিকারি প্রতিবেশী লজ্জিত গলায় বললেন, ‘এই ভেড়াটার প্রাণ বাঁচিয়ে ছিলাম একবার।’
‘তাহলে ও তোমাকে গালি দিচ্ছে কেন?’
‘গালি দিচ্ছে?’
‘ভেড়া বলছে, “তুমি একটা নেকড়ে”।’ –

কে বেশি পেটুক

নাসিরুদ্দিন হোজ্জার বাড়িতে তাঁর কিছু বন্ধু এসেছেন। অতিথিদের তরমুজ দিয়ে আপ্যায়ন করলেন হোজ্জা। বন্ধুদের সঙ্গে খেতে বসলেন হোজ্জা নিজেও।
হোজ্জার পাশেই বসেছিলেন তাঁর এক দুষ্টু বন্ধু। তরমুজ খেয়ে খেয়ে বন্ধুটি হোজ্জার সামনে তরমুজের খোসা রাখছিলেন। খাওয়া শেষে দেখা গেল, হোজ্জার সামনে তরমুজের খোসার স্তূপ।
দুষ্টু বন্ধুটি অন্যদের বললেন, ‘দেখেছেন কাণ্ড? হোজ্জা কেমন পেটুক? তার সামনে তরমুজের খোসার স্তূপ হয়ে গেছে’!
হোজ্জা হেসে বললেন, ‘আর আমার বন্ধুটির সামনে দেখছি একটা খোসাও নেই! উনি খোসাশুদ্ধ খেয়েছেন! এখন আপনারাই বলুন, কে বেশি পেটুক!’